ইসলামে গনতন্ত্র হারাম

sadekmahmud

May 17, 2025

ইসলামে গনতন্ত্র বিলকুল হারাম, কিন্তু ইসলামের প্রতিনিধি হইয়ে গণতন্ত্রের নির্বাচনে আসতে চাইছে যারা এরা কারা? 

মূর্তি পূজা ইসলামে শিরক, শিরক মানে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা, যা সর্বোচ্চ লেবেলের গোনাহ্। কিন্তু ইসলামের ধ্বজাধারী হয়ে পূর্ণাঙ্গ ঈমান নিয়ে মূর্তি পূজায় পাহারা ও স্বেচ্ছা সেবা দেওয়ার দায়িত্ব নিতে চাইছে এরা কারা? তাদের উদ্দেশ্য কি? এরা ইসলাম ধর্ম লালন পালন করতে চাইছে নাকি ধর্মকে ব্যবহার করে ক্ষমতার রস চাঁটতে চাইছে?

বৈষম্যহীন ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে ভিন্নধর্মীদের ধর্ম পালন করতে ইসলামী সংগঠনের নেতা, মাদ্রাসার ছাত্র বা ঈমানদার মুসলমানদের কাছে কেনো নিরাপত্তা ভিক্ষা নিতে হবে, তাহলে রাষ্ট্রের দায়িত্ব কি? 

আর এইযে বিভিন্ন ইসলামিক বক্তাগণ তাদের বক্তৃতায় বলতেছেন যে মুসলমানরা মন্দির পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের নিরাপত্তা দিয়েছে; কিন্তু দেশে যে এত এত মন্দিরে হামলা হলো এইসব হামলা কি ভারতের হিন্দুরা, ইজ্রায়েল থেকে ইহুদী নাসারা বা চিন থেকে বুদ্ধিস্টরা এসে করেছে?

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে মন্দির ভাঙ্গে যারা, পাহারা দেওয়ার নাটকও করে এরাই। বস্তুত যেই ধর্মে মূর্তি পূজা বিলকুল হারাম, (তারা ক্ষমতা পেলে) সেই ধর্মের সমাজে কখনোই মূর্তি ও মূর্তি পূজারীরা নিরাপদ নয়। এখানে ইসলামিক রাজনৈতিক নেতারা তাদের রাজনীতির স্বার্থে মাইক দিয়ে জনসম্মুখে বলবে যে তারা ভিন্নধর্মীদের ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দিবে, পূজায় পাহারা ও নিরাপত্তা দিবে, অন্যদিকে তলে তলে আরেক মুসলমান ঈমানী ব্যক্তিকে ঈমানী জোসে মূর্তি ভাঙার হাদীস শোনাবে, মূর্তি ভাঙার সওয়াবের সবক দিবে।

গণতান্ত্রিক দেশগুলিতে ধর্মের নামে রাজনীতি করা ব্যাক্তিরা সংখ্যালঘুদের সাথে সাপ-ব্যাঙের রাজনৈতীক গেমস্ খেলেন, যেখানে সাপকে ব্যাঙ এর অবস্থান দেখিয়ে দিয়ে আবার ব্যাঙকে গভীর মমতায় পরামর্শ দেয় সজাগ থাকার! 

ধর্মের নামে ধর্মব্যবসায়ী ক্ষমতালোভী ইতরদের এই স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রে এইসব ইতরামি রুখে দিতে হবে। আমরা কোনো ধর্মীয় উগ্রবাদী রাষ্ট্র চাই না, আমরা সকলের সম অধিকারের বৈষম্যহীন ধর্মনিরপেক্ষ একটি আদর্শ রাষ্ট্র চাই, যেখানে সংখ্যায় কেউ কম হোক আর বেশি হোক, সকলের ধর্ম পালনের বা না পালনের স্বাধীনতার মান, অনুভূতি এবং অধিকার হবে সমানে সমান। 

ধর্ম রাষ্ট্রীয় ভাবে পালন করার কোনো বিষয় নয়, ধর্ম একটি ব্যক্তিগত চর্চা, আপন আত্মশুদ্ধির চর্চা, সবাই এটির চর্চার সমান অধিকার রাখে। এখানে কেউ কারো ধর্ম পালনে বাধা দিতে পারবে না এইটা নিশ্চিত করা একটি আদর্শ রাষ্ট্রের দায়িত্ব, কোনো নির্দিষ্ট ধর্মকে প্রাধান্য দেয়া কোনো আদর্শ রাষ্ট্রের চরিত্র হতে পারে না। রাষ্ট্র হবে ধর্ম মুক্ত, ব্যাক্তি পরিবার বা সমাজ হবে ধার্মিক, তবেই সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব, আদর্শ রাষ্ট্র গঠন সম্ভব।

সুতরাং ধর্ম বেঁচে খাওয়া ধর্ম ব্যবসায়ীদের এই ধর্মের সাথে রাষ্ট্রের নীতিকে লেপে দিয়ে কাউকে কোনো নির্দিষ্ট ধর্ম পালনে বাধ্য করা ও ভিন্নধর্মীদের রাষ্ট্রীয় ভাবে ছোটো করার এই ষড়যন্ত্র, এই পাকিস্তানি দর্শনের প্রয়াস আমাদের রুখে দিতেই হবে।

Leave a Comment