কিছু খারাপ সময় সবার জীবনেই আসে। একটা কিছু ঘটে গেলে সবার আগে নিজেকে প্রশ্ন করে দেখবেন যে, যেটা হয়েছে সেটা পরিবর্তন করার সুযোগ আছে কিনা। যদি সুযোগ থাকে আপনার উচিত হবে পরিবর্তন করা।
আর এই পরিবর্তনের সময় দেয়ালে পিঠ চাপড়ানোর মানে হল আপনি সেই সুযোগটাও নষ্ট করে ফেলছেন। আর যদি ঘটনাটা পরিবর্তন করার কোন সুযোগ নাই থাকে তাহলে নিজেকে এভাবে বোঝাবেন যে – আমি এটা পরিবর্তন করতে পারব না।
– আমি এটা পরিবর্তন করতে পারব না
এই বাক্যটি বারবার নিজের ভেতরে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলেই দেখবেন বাক্যটি আপনাকে
[আমি এটা মেনে নিয়েছি] এর কাছে পৌঁছে দেবে। আপনি যখন মেনে নিতে শুরু করবেন তখনই কষ্ট গুলো কমতে শুরু করবে। কেননা কস্টগুলোর জন্ম হয়েছিল আপনার মেনে নিতে না পারা থেকেই। কিছু মানুষ দেখবেন সামান্য ব্যাপারে ও অধিক কষ্ট অনুভব করে, আবার কিছু মানুষ দেখবেন বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্থ হয়েও ততটা কষ্ট অনুভব করে না।
এখানে পার্থক্য শুধু মেনে নেওয়ার। একজন মেনে নিতে পারছেন আরেক জন পারতেছে না।
বিষাদগ্রস্ত দিনে আনন্দের স্মৃতিচারণ কষ্ট বাড়ায় কিন্তু আনন্দের সময় কষ্টের স্মৃতিচারণ করলেও কষ্ট কমায় না। যেটা বিষণ্ণতা সেটা সব সময়ের জন্যই বিষণ্ণতা; আপনি সেটা ভালো সময়ে ভাবুন আর খারাপ সময়ে ভাবুন সেটা আপনাকে বিশন্নতা ছাড়া আর কিছুই দেবে না।
কেউ যদি কষ্ট পাবার একটা যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে এর থেকে মুক্তি পাবার কারণ জানতে চায় তাহলে আমি তাকে বলব এর থেকে মুক্তি পাবার একটাই উপায় আছে, সেটা হল কষ্টটাকে স্বাভাবিক ভেবে সহ্য করতে হবে।
কিছু কষ্ট তো জীবনে থাকবেই ।
যেমন আপনার বাবা মারা গেলে আপনি কষ্ট পাবেন না – সেটা কী আপনি চান ?
আপনার ব্যক্তিত্বেরর অধঃপতন কখন হয় জানেন ?
যখন আপনি কতটা কষ্ট পাবেন সেটা আপনি না , ঠিক করে দিচ্ছে অন্য কেউ !
একটা উদাহারণ দেই:-
একটা ট্রাফিক যখন হাতের ইশারায় সিগন্যাল দিয়ে সব গাড়ি আটকে দেয়, তখন আটকে থাকা গাড়ি গুলোর ভেতরে সব চাইতে বেশি আফসোস করে যে গাড়ি গুলো সিগন্যালের প্রথম সারিতে থাকে, তারা বাড়তি কষ্টটা এই কারণে পায় যে তাদের ঠিক আগের গাড়িটাই ইতিমধ্যে পার হয়ে গেছে ।
বিড়ম্বনাই তার একমাত্র কষ্ট না তখন, সে থেমে আছে এই কষ্টটাকে ছাপিয়ে গেছে তার ঠিক পাশেরজন এগিয়ে গেছে এই ব্যাপারটার কষ্টটা – এই ভাবনাটাই তাকে সিগন্যালে আটকে থাকা পেছনের অন্য যাত্রীদের চাইতে বেশি ভোগাচ্ছে ।
লক্ষ করলে দেখবেন অধিকাংশ সময়ই নিজের থেমে থাকার জন্য না বরং অন্যকেউ কেন এগিয়ে গেছে এই নিয়ে আমরা একধরনের যন্ত্রণায় ভুগি। সেই অন্য কেউ যদি বিল গেটস হয় তাহলে আমাদের কিছুই আসে যায় না কিন্তু যখনই আপনার পাশের কেউ হয় তখন কেন এরকম সুড়সুড়ে লাগে জানেন ?
কারণ আমাদেরকে বড় করাই হয়েছে একধরণের প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে।
অথচ জীবনটা এরকম কোন রেইস খেলা না যে কেবল যারা ফাস্ট সেকেন্ড থার্ড হবে তারাই মেডেল পাবে।
গোল চত্বর দৌড়ে সব চাইতে পেছনে যে দৌড়াচ্ছে, সে কিন্তু চাইলেই এভাবে ভাবতে পারে যে তার পেছনে কেউ নেই। সে যদি এখন উল্টো দিকে দৌড় শুরু করে তাহলে সেখানে সেই প্রথম হবে। হ্যা, যেভাবেই হউক সেই সবার আগে সেখানে থাকবে। এটা কাম্য নই,তবে অসম্ভব কিছু না ।
জগতে যারা সাকসেস হয়েছে তারা কিন্তু সবার দেখানো পথ ধরে সামনে এগোয় নি, তারা নিজেরাই একেকটা পথ তৈরি করে নিয়েছে ।
সমস্যা আপনাকে প্রতিনিয়তই পাকরাও করে বেড়াবে যতদিন এই গ্রহে থাকবেন।
আর বেচেঁ থাকা অবস্থায় আপনার খারাপ সময়গুলো যত খারাপই হউক না কেনো এটা থেকে পরিত্রাণের জন্য অবশ্যই কোনো না কোনো পথ আপনার খোলা থাকবেই , আপনাকে শুধু সেই পথগুলোই খুঁজে বের করতে হবে।
–