পৃথীবির প্রায় সকল প্রাণীই মাতৃতান্ত্রিক হলেও মানুষ কেনো পুরুষতান্ত্রিক?
পৃথিবীতে যুগযুগ ধরে শক্তভাবে টিকে থাকা যত তন্ত্র রয়েছে তারমধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে পুরুষতন্ত্র।
পৃথিবীতে আজকের এই পুরুষতন্ত্র এমনিতেই আসেনি, এর পিছনে রয়েছে কারন। যেখানে পুরুষতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পূর্বের ইতিহাসটা প্রায় ৮০% পুরুষদের জন্যেই যথেষ্ট মর্মান্তিক ছিল!
সামগ্রিকভাবে নারী এবং পুরুষদের বাকি সব জায়গায় এক লাইনে এক পাল্লায় এক অবস্থানে সমান তালে সম অধিকার সম মর্যাদায় বা যেকোনো সম অবস্থানে নিয়ে আসতে পারলেও যেখানে সমতা নিশ্চিত করতে পারবেন না তা হলো যৌনতায়।
প্রজনন এবং যৌনতায় নারী এবং পুরুষের ইচ্ছা আখাঙ্খা চাহিদা বা আগ্রহ কখনোই এক ছিল না, এবং এখনো যথেষ্ট ভাবেই নেই।
যেকোনো পুরুষই যৌনতায় যথেষ্ট উদার, যেখানে সে যেকোনো ধরনের নারীদের সাথেই যৌনতায় যেতে দ্বিধাবোধ বা সংকোচবোধ করেন না। কিন্তু নারীরা এই ব্যাপারে যথেষ্ট খুঁতখুঁতে হয়।
ভাবুন তো, একটা দেশে যদি বিবাহ প্রথা বা কমিটেড রিলেশনশিপের মত ব্যাপার না থাকতো এবং নারীরা যদি প্রজননের জন্যে স্বাধীন এবং স্বাধীনভাবে তার ইচ্ছেমত পুরুষ বেছে নেওয়ার সুযোগ পেত, তাহলে কেমন হতো?
দেখা যেত যে প্রায় সব নারীরাই গর্ভধারণের জন্যে উচা-লম্বা স্মার্ট শক্তিশালী হ্যান্ডসাম পুরুষদেরকে বেছে নিতেন, ফলে হ্যান্ডসাম পুরুষরা একাধিক নারির সাথে যৌনানন্দ করার সুযোগ পেলেও যেইসব পুরুষরা যথেষ্ট সুদর্শন বা হ্যান্ডসাম না তারা কোনো নারির সাথেই যৌনতায় যাওয়ার সুযোগ পেত না।
এইভাবে দেখা যেত যে নারীরা ১০০% পূরুষের মধ্যে শুধুমাত্র ২০% পুরুষকেই গর্ভধারনের জন্যে বেছে নিত, আর প্রায় ৮০% পুরুষই যৌনতায় বঞ্চিত এবং অবহেলিত হতো।
মানুষের আদিম শিকারী যুগে এমনটাই হতো, এখন অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ক্ষেত্রেও এমনটি হয়। আমাদের দেশে আশ্বিন কার্তিক মাসে কুকুরদের প্রজননের সময়ও এই ব্যাপারটি চোঁখে পরে।
কিন্তু এটি কি নারীদের দোষ?, মোটেও না।
যেখানে আপনি মাত্র ৪৮ টাকায় ১ হালি মুরগির ডিম কিনতে গিয়ে দোকানদারকে বড়ো ডিম দিতে সাজেস্ট করেন কিংবা ডিমের কেইস থেকে আপনি নিজেই বেছে বেছে বড়ো বড় ডিম গুলি নিতে চান। সেখানে একজন নারী যখন ১০ মাস গর্ভধারণ করবেন সেখান তিনি অবশ্যই এই কষ্টের ফলাফল হিসেবে তার সুস্থ সুন্দর সন্তান বা এইরূপে ভালো ফলাফল আশা করবেন, ফলে সে নিশ্চিত ভাবেই ভালো মানের স্পার্ম টা তার গর্ভে নেওয়ার চেষ্টা করবেন, এবং এটাই স্বাভাবিক। গোটা প্রাণীজগতও এইভাবেই চলছে।
পৃথীবির ইতিহাসে মানুষই একমাত্র প্রাণী যে ভবিষ্যত পরিকল্পনা করতে, আর এই কল্পনা করার শক্তিই মানুষকে পৃথিবীর সকল প্রাণী থেকে আলাদা এবং শ্রেষ্ঠ করেছে।
ফলে পৃথিবীর অন্য সব প্রাণীরা এখনো মাতৃকেন্দ্রিক থাকলেও, মানুষরা তার কল্পনা শক্তি ব্যবহার করে এই কৃত্রিম পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা তৈরি করেছেন নারী পূরুষের সমতার যৌনতা নিশ্চিত করার জন্যে। এই সমতার যৌনতা নিশ্চিতের হাত ধরেই এই কৃত্রিম পুরুষতন্ত্র এসেছে, এতে সামাজিক জীব মানুষের এই সমাজ ব্যবস্থার কৃত্রিম উন্নয়ন হলেও, ক্ষতি হয়েছে নারী এবং প্রকৃতির।