আমাদের জীবন একটা মহাবিদ্যালয়, জন্মলঘ্ন থেকে মৃত্যু অবধি আমরা যত প্রকার বিপদে পড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা লাভ করি প্রত্যেকটা অবস্থানই আমাদের কোনো না কোনো শিক্ষা দিয়ে যায়। আমাদের এই শিক্ষাটাই হয়ে উঠে বাস্তব জীবনের বড় শিক্ষা, কিন্তু আমরা কজন এই বাস্তব শিক্ষার মূল্যায়ন করি। সমাজের বেশিরবিভাগই দেখা যায় সার্টিফিকেট পেতে ব্যাস্ত । আমাদের পুঁজিবাদী সমাজে আমরা সাধারণত একটা ভালো চাকরির আশায় পড়াশুনা করি । কিন্তু এতে কি আমাদের চিন্তাভাবনার কোনো উন্নতি ঘটছে, বা ঘটার সম্ভাবনা আছে। পাঠ্যবই থেকে আমরা যা শিখি তা নিত্তান্তই কমন কিছু, যা সবাই জানে বা পরে। কিন্তু আপনি আমি যদি এর বাহিরের কিছু পড়ার, শিখার চিন্তা করি তাহলে ব্যাপারটা একটু ক্রিয়েটিভ হতো না? অবশ্যই হতো। শেখা এবং সাফল্যলাভ ব্যাপার দুটু অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত, মানুষের শেখার কোন সীমানা নাই তাই শেখার কোনো শেষও নাই। শেখা জীবনের একটি চিরন্তন প্রক্রিয়া যা মানুষের বেঁচে থাকা অবধি চলতে থাকে। জীবনে আপনি আমি যাই করি, যেখানেই যাই, যেটাই দেখি সর্বত্রে কিছু না কিছু একটা শেখার থাকেই। আর এটাই আমাদের জীবন। তাই আমাদের উচিত প্রতিদিনই নতুন কিছু দেখা পড়া শেখা, নতুন চিন্তা ভাবনা ও মনোবলের সঞ্চার করা। প্রতিদিন নতুন কিছু শেখাও হয়তো একধরণের সাফল্য, তাই আমাদের উচিত নিজস্ব জ্ঞানকে প্রসারিত করার জন্যে নতুন কিছু শিখা । তাই আসুন আমরা শিখার হাত বাড়িয়ে দেয়।
তবে কোথায় কিভাবে শিখবো,
প্রত্যেকটা লেখকের বইয়েই কিছুনাকিছু শেখার থাকে বা আছে, তাই সব বইই পড়ার যোগ্য বলে আমি মনে করে থাকি । তবে আপনার আশেপাশে এমন একদল মানুষ পাবেন যারা আপনাকে বলবে উমুক বই তুমুক বই বা উমুকের তুমুকের লেখা বই পড়লে ঈমান থাকবে না, বা আপনি জাহান্নামে বা নরকে যাবেন। আসলে ভাই যার যার ঈমান নৈতিকতা যার যার অধীনে, আপনি ঠিক থাকলে আপনার ঈমান কারো বই নাড়াতে পারবে বলে আমার মনে হয়না । আর যে কারো বই পড়লে যে আপনি জাহান্নামে বা নরকে যাবেন এমনটাও কোরআন হাদিসের কোথাও আমি দেখিনি, আপনারা কেঊ দেখলে বা জানলে আমাকে কমেন্টে জানিয়ে দিলে কৃতজ্ঞ থাকবো। যারা আমাদেরকে উপরিউক্ত কথা গুলি বলে আমাদের জ্ঞানার্জনের পথরুদ্ধ করে, তাদের দিকে একটু খেয়াল করে চিন্তা করলে দেখাযায় তাদের মধ্যে কোনো বাস্তব চিন্তা ও ক্রিয়েটিভিটি নাই। এরা নতুন কিছু করতে বা শিখতে চায়না। এরা আমাদের প্রাথমিক ও মাধ্যমক লেবেলের শিক্ষায় সৃজনশীলতাকেও মেনে নিতে চায়না। তারা আজীবন পুরুনো ধ্যান ধারণায় মস্ত থাকতেই পছন্দ করে। আমার ব্যক্তিগত মতে, অনুসন্ধানী ও জ্ঞানপিপাসুদের এদের আশেপাশে না থাকায় মঙ্গলজনক ।
অন্য আর কোথায় থেকে শেখা যায় – বর্তমান অবস্থায় আমি আমার মতামত থেকে বললে আমার সবচেয়ে বড় শিক্ষালয় হলো উইকিপিডিয়া , ইউটিউব বা ইন্টারনেট ব্লগ। আপনারাও এটাকেই শিক্ষার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। . . .
প্রায় ই আমাদের সাধারণ জীবনে কিছু কিছু অসাধারণ ব্যাপার ঘটে থাকে, তেমনি অনেক বিরক্তিকর ব্যাপারও ঘটে থাকে আমাদের জীবনে, আমাদের মধ্যে খুব কম মানুষই আছে যারা সব বিরক্তিকর কাজের মাজেও আনন্দভূতি খুঁজতে যায়। এই ব্যাপারটা ময়লার ড্রাস্টবিনে সোনার কয়েন খুজার মতোই একটা ব্যাপার। কিন্তু আপনার হাতে সময় থাকলে আপনি এই কাজটিও কেন করবেন না, কবি গুরুর একটি লাইন মনে আছে আমাদের অনেকেরই- যেখানে দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দেখ তাই পাইলেও পাইতে পারো অমূল্য রতন। তাই আমাদের সবখানে সবকিছুই এনালাইসিস করে দেখা উচিত। তা না হলে আমাদের শিখার মাজেও একটা গ্যাপ থেকে যেতে পারে। তাই সব লেখকের সব ধরণের বইও আমাদের পড়া উচিত, যদিও সেটা হয়ে থাকে আপনার আমার চিন্তার পক্ষে বা বিপক্ষে।
আর আমাদের অবশ্যই অন্যদের নয় বরং প্রতিটি দিন শেষে নিজেকেই প্রশ্ন করা উচিত আজ আমি কি শিখলাম / প্রতিদিন না পারলেও আমাদের অন্তত প্রতি সপ্তাহে হলেও নিজেকেই প্রশ্ন করা উচিত যে এই সপ্তাহে আমি কি শিখলাম। আমাদের এইসব প্রশ্নের উত্তর নেগেটিভ বা ব্যার্থতামুলক অপদার্থিক হতেই পারে তা হলেও আমার-আপনার এই প্রশ্নগুলি প্রতিনিয়তই আমাদের মদ্ধে চলমান রাখতেই হবে।এই নিজেকে প্রশ্ন করা ব্যাপারটাই আমাদের সচেতন স্মার্ট করে তুলবে এবং এর মাধ্যমে আমরা নিজেকেই ভালো ভাবে জানতে বুজতে পারবো।
যেহেতু আমরা আজীবন শিক্ষার্থী, তাই মৃত্যু অবধি আমাদের প্রতিনিয়তই শিখতে হবে সবথেকে সবখানে সবঅবস্থায় ।